টাকা আমাদের জিবনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। সবার জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত টাকার ব্যবহার থাকবেই।
আপনি যা এই কিনতে চান, বা করতে চান তার জন্যই টাকার দরকার হবে। তাই আমাদের জীবনে মানি ম্যানেজমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ন।
আপনি যদি প্রতিদিনের খুচরো টাকা গুলো জমিয়ে রাখেন, তবে মাস শেষে অনেক টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন। দেখতে দেখতে মাস প্রায় শেষ হয়ে যায়, বছর শেষ হয়ে যায়। পুরো এ বছর জুড়ে কত টাকা জমিয়েছেন আপনি। <br>
হতে পারে আপনার স্বল্প আয়। কিন্তু সেই টাকা থেকে আপনি কত টাকা জমিয়েছেন। যদি আপনার হিসাবের খাতা শুন্য হয় তবে এখন থেকেই সচেতন হন। শুধু আয় করাই যথেষ্ট নয়, তার সাথে ব্যায়ের হিসাবও রাখতে হবে এবং সঞ্চয় কত করলেন।
কিভাবে আপনি টাকা জমানো শুরু করবেন। কোন চিন্তাই নাই। খুব সহজে কিছু উপায় মেনে চললে, বাজেট করে টাকা খরচ করলে টাকা জমানো কোন কঠিন ব্যাপার নয়।
দেখে নিন টাকা জমানোর ১২ টি উপায়:
(১)প্রতি মাসে নিজের ব্যায়ের টাকার একটি বাজেট তৈরী করে ফেলুন। যত টাকা ব্যায় করবেন তার একটি হিসাব রাখুন।
যে মাস থেকে হিসাব করা শুরু করবেন সে মাসের প্রথমে যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করবেন তার রিসিপট টি রেখে দেন।
শুধু প্রথমের হিসাব না পুরো মাসের রিসিভ জমা করে রাখবেন। রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে, জামা কাপড় কিনতে গেলে, যে রিসিপ্ট দিবে তা জমিয়ে মাস শেষে নিয়ে বসুন।
তবে নিজেই বুঝতে পারবেন কোন খাতে বেশি কম ব্যায় করা হয়েছে। সেই হিসাব করে পরের মাসের বাজেট তৈরী করে ফেলুন।
(২) আলাদা খামে খরচের টাকা গুছিয়ে রাখুন। সব থেকে বুদ্ধিমানের কাজ কি জানেন, আপনি খরচের টাকা আলাদা রাখবেন।
যেমন: দরকারি জিনিস পত্রের জন্য আলাদা খামে, বই কেনার জন্য আলাদা খামে টাকা রাখবেন। বাজেটের বাইরে টাকা খরচ করতে পারবেন না।
(৩) টাকা জমানোর জন্য ছোট খাট একটি পরিকল্পনা করুন। টাকা জমনোর অভ্যাসটা ছোট করে শুরু করতে পারেন আপনি। মাসের প্রথমে আপনার আয়ের একটি ছোট অংশ রাখুন জমানোর জন্য।
এছাড়াও প্রতিদিনের আয় থেকে ৫০ – ১০০ - ২০০ টাকা বাচিয়ে রাখতে পারেন। সপ্তাহ শেষে কত টাকা বাচঁল তার হিসাব রাখুন। পরের সপ্তাহে টাকা বাচাঁনোর পরিকল্পনা করুন।
(৪) বোনাসের সম্পূর্ন টাকা খরচ করবেন না। সরকারি বেসরকারি যে কোন চাকরিতে বোনাস দেওয়া হয়। বোনাসে টাকা হাতে পাওয়ার সাথে সাথে সব খরচ করবেন না।
ভবিষ্যতের জন্য কিছু টাকা জমিয়ে রাখবেন।
(৫) খুচরা টাকা গুলো আলাদা করে রাখুন। দেখা যায়, বিকালে বের হয়ে চা, বিস্কুট, পুরি, কলা খেলে অনেক টাকা হাতে খুচরা হয়ে আসে।
এই ২, ৫, ১০, ২০ টাকা কি করেন আপনি, নিজেও বলতে পারবেন না। তাই এ টাকা গুলো রেখে দিয়ে মাস শেষে হিসাব করুন। এতেও অনেক টাকা জমে যাবে।
(৬) ২৪ ঘন্টায় কত টাকা খরচ করবেন তার হিসাব করে নিন। প্রতিদিনের জন্য একটি বাজেট করে নিন। প্রতিদিন কোন কোন খাতে কত টাকা খরচ করবেন তার হিসাব করুন।
বাজেটে যত টাকা হিসাব করবেন তত টাকা বা তার কম টাকা খরচ করবেন। এর বেশি ১ টাকাও নয়।
(৭) ঘন্টায় আপনার পারিশ্রমিক হিসাব করুন। আপনার যদি একটি ঘড়ি পছন্দ হয় ১৫০০ টাকা দামের। তবে আপনি হিসাব করুন , ১৫০০ টাকা আপনার কত ঘন্টার পারিশ্রমিক।
ঘড়িটি আপনার পারিশ্রমিকের সাথে সামঞ্জস্য কি না।
(৮) অনলাইনে কেনা কাটার পেজ আনলাইক করুন। অনেক সময় আমরা অনলাইনে ছবি দেখে অর্ডার করে ফেলি। খরচের হিসাব টাও এভাবেই অনেক বেড়ে যায়।
তাই কেনাকাটার পেজ আনলাইক করুন।
(৯) খরচবিহীন একটা দিন কাটানোর চেষ্টা করুন। সব দিন না হলেও ১৫ দিনে ১ দিন খরচ বিহীন কাটান, দেখবেন ১ দিনে অনেক টাকা বেছে যাবে।
আপনার কাছে এটি কেমন যেন লাগলেও কালকে থেকে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
(১০) অফিসের দুপুরের খাবারটা বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। আপনি দুপুরে বাইরে থেকে যদি খাবার কিনে খান তবে প্রতিদিন ১০০ টাকা খরচ হবে। যা মাস শেষে অনেক টাকা।
তাই বাসা থেকে কষ্ট করে খাবার বানিয়ে নিলে আপনার এ টাকাটা বেচে যাবে।
(১১) প্রতিমাসে একবার করে বাইরে খাওয়া কমিয়ে আনুন। আপনারা অনেকে আাছেন যারা প্রতি মাসে ৫ দিন কিংবা ১০ দিন বাহিরে খান।
হতে পারে, পরিবারের সাথে বা বন্ধুদের সাথে বা ভালবাসার মানুষের সাথে। আগামি মাস থেকে এক বার বাইরে খাওয়া বাদ দিন। এক বেলা রেস্টুরেন্টে খেতে অনেক টাকা খরচ হয়।
তাই বাইরে কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
(১২) জরুরি অবস্থার জন্য টাকা জমিয়ে রাখুন। দেখা যায় মধ্যবিত্ত পরিবারে বিপদের সময় টাকা পয়সা থাকে না। তাই আপনি খরচের ব্যাপারে সচেতন থেকে জরুরী অবস্থার জন্য কিছু টাকা জমিয়ে রাখবেন।
যা আপনার ভবিষ্যতে অনেক কাজে দিবে। বিপদের সময় অন্যের কাছে হাত পাততে হবে না।
আপনার জীবনের বিভিন্ন ব্যয় পর্যালোচনা করলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কোন খরচটি আপানর জন্য অনর্থক হয়েছে। সেই ভুলগুল শুধরে নিতে হবে।
ধন্যবাদ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন